ছাত্র আন্দোলনকালে হত্যাকাণ্ড: ইউটিউবার তৌহিদ আফ্রিদি গ্রেপ্তার, বাবাও একই মামলার আসামি

ভূমিকা: ইউটিউবারের গ্রেপ্তারে দেশজুড়ে তোলপাড়

দেশের তরুণ প্রজন্মের কাছে তুমুল জনপ্রিয় ইউটিউবার ও কনটেন্ট ক্রিয়েটর তৌহিদ আফ্রিদিকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। ঝলমলে পর্দার পেছনের এই অন্ধকার খবরে হতবাক তার কোটি অনুসারী। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায় এক যুবককে হত্যার অভিযোগে দায়ের হওয়া মামলায় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) তাকে গ্রেপ্তার করেছে। সোমবার আদালত তার পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করলে ঘটনাটি আরও গভীর রহস্যের দিকে মোড় নেয়।

গ্রেপ্তার ও পাঁচ দিনের রিমান্ড

রবিবার (২৪ আগস্ট) রাতে বরিশাল শহরের বাংলা বাজার এলাকা থেকে সিআইডির একটি বিশেষ দল অভিযান চালিয়ে তৌহিদ আফ্রিদিকে গ্রেপ্তার করে। পরদিন সোমবার দুপুরে তাকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে হাজির করা হয়। মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে সিআইডির পক্ষ থেকে ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হলে, শুনানি শেষে আদালত ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

ইউটিউবার তৌহিদ আফ্রিদি ও তার বাবা নাসির উদ্দিন সাথী

যে অভিযোগে হত্যা মামলা

সিআইডি সূত্রে জানা যায়, তৌহিদ আফ্রিদি যাত্রাবাড়ী থানায় দায়ের হওয়া একটি হত্যা মামলার ১১ নম্বর আসামি। মামলাটি ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট মাসে দেশব্যাপী ছড়িয়ে পড়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় যাত্রাবাড়ী এলাকায় আসাদুল হক বাবু নামে এক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যার অভিযোগে করা হয়েছিল। সুনির্দিষ্ট তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতেই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে তদন্তকারী সংস্থা দাবি করেছে।

একই মামলায় বাবাও অভিযুক্ত

এই ঘটনায় নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে যখন জানা যায়, একই মামলায় তৌহিদ আফ্রিদির বাবা এবং বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল 'মাই টিভি'র চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন সাথীও ২২ নম্বর আসামি হিসেবে অভিযুক্ত। তাকে এই মামলায় আগেই গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। অর্থাৎ, বাবা ও ছেলে দুজনই এখন একই হত্যা মামলার আসামি হিসেবে পুলিশি হেফাজতে রয়েছেন।

কে এই তৌহিদ আফ্রিদি?

তৌহিদ আফ্রিদি বাংলাদেশের একজন শীর্ষস্থানীয় ইউটিউবার। তার চ্যানেলে মূলত লাইফস্টাইল ভ্লগ, প্র্যাঙ্ক ভিডিও এবং ভ্রমণকাহিনী প্রকাশ করা হয়, যা তরুণদের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয়। বিলাসবহুল জীবনযাপন এবং আকর্ষণীয় উপস্থাপনার মাধ্যমে তিনি খুব অল্প সময়েই लाखों সাবস্ক্রাইবার অর্জন করেন। এমন একজন জনপ্রিয় তারকার বিরুদ্ধে হত্যা মামলার মতো গুরুতর অভিযোগ ওঠায় বিষয়টি 'টক অফ দ্য কান্ট্রি'-তে পরিণত হয়েছে।

সামাজিক মাধ্যমে তোলপাড়

এই গ্রেপ্তারের খবর ছড়িয়ে পড়ার সাথে সাথেই ফেসবুক, ইউটিউবসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঝড় ওঠে। আফ্রিদির ভক্তরা অনেকেই এই খবর বিশ্বাস করতে পারছেন না এবং এটিকে ষড়যন্ত্র বলে দাবি করছেন। আবার একটি বড় অংশ বলছে, আইন সবার জন্য সমান এবং নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে আসল সত্য বেরিয়ে আসা উচিত। গণমাধ্যম এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা ও বিতর্ক চলছে।

শেষ কথা

জনপ্রিয়তার শীর্ষে থাকা একজন ইউটিউবারের বিরুদ্ধে হত্যার মতো سنگین অভিযোগ এবং তার বাবারও একই মামলায় জড়িত থাকার তথ্য পুরো ঘটনাকে অত্যন্ত জটিল করে তুলেছে। বর্তমানে তিনি সিআইডির হেফাজতে রিমান্ডে রয়েছেন। তদন্ত শেষে এই ঘটনার আসল রহস্য উন্মোচিত হবে এবং ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হবে, এটাই এখন সবার প্রত্যাশা।

সর্বশেষ সংবাদ পড়ুন

প্রধান উপদেষ্টার মালয়েশিয়া সফর এবং বিনিয়োগ ও কর্মী নিয়োগ সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার সর্বশেষ আপডেট জানতে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুন।

বিস্তারিত জানুন

Post a Comment

Previous Post Next Post