🕌 ভূমিকা:
বছরের পর বছর আমরা শুনে আসছি, "চালাকি দিয়ে সব সময় লাভ হয় না। কিন্তু এই গল্পটা একটু ভিন্নরকম — এখানে দেখা যাবে কিভাবে এক চালাক ভিখারির হঠাৎ জ্ঞানী সাজা, তাকে সাময়িক সফলতা দিলেও শেষমেশ থেমে গেল বিচারের এক থাবায়।
চলুন দেখে নিই, বাগদাদের রাস্তায় ঘটে যাওয়া এই অদ্ভুত কিন্তু শিক্ষণীয় ঘটনা।
🎭 চালাক ভিখারির অভিনব চাল
একবার বাগদাদের এক অলস অথচ চালাক ভিখারি ঠিক করল, সে সহজে টাকা কামানোর একটা বুদ্ধি বের করবে। কিন্তু সে কারও কাছে কিছু চাইবে না!
সে প্রতিদিন শহরের সবচেয়ে ব্যস্ত একটি গেটের পাশে বসত। ধনী লোকদের দেখলেই সে হাসত। কাঁদত না, আর্তনাদ করত না—শুধু তাকিয়ে তাকিয়ে হাসত।
এই অদ্ভুত কাণ্ডে লোকজন অবাক হতে লাগল। কৌতূহল থেকেই অনেকে তার হাতে কিছু ডিনার বা স্বর্ণমুদ্রা দিয়ে যেত।
⚖️ বিচারের আগমন
একদিন বাগদাদের সম্মানিত কাজী (বিচারক) সেই পথ দিয়ে যাচ্ছিলেন। তিনি এই অদ্ভুত ভিখারির হাসিমুখ দেখে তাকে ডাকলেন এবং প্রশ্ন করলেন:
![]() |
মানুষ সারাদিন দৌড়ায় টাকা আর ক্ষমতার পেছনে, অথচ শেষ ঠিকানা তো একটা ছয় ফুট কবর। আমি তাদের এই বোকামি দেখে হাসি |
“তুমি কেন প্রতিদিন সবার দিকে তাকিয়ে হাসো?”
ভিখারির উত্তর ছিল সহজ কিন্তু গভীর:
“মানুষ সারাদিন দৌড়ায় টাকা আর ক্ষমতার পেছনে, অথচ শেষ ঠিকানা তো একটা ছয় ফুট কবর। আমি তাদের এই বোকামি দেখে হাসি।”
কাজী প্রথমে মুগ্ধ হলেন। ভেবেছিলেন, এই ভিখারির মধ্যে সত্যিই গভীর জ্ঞান আছে। তাই তিনি তাকে কিছু স্বর্ণমুদ্রা উপহার দিলেন।
🕳️ তবে এরপর কী হলো?
ভিখারির নাম ছড়িয়ে পড়ল শহরময়। ধনী-গরিব সবাই তার হাসি দেখতে আসত। সে অনেক টাকা পেত—কিন্তু ধরা পড়ে গেল তখনই, যখন এক ব্যবসায়ী অভিযোগ করল সে তাকে ব্যঙ্গ করে হাসছে।
কাজী আবারও ভিখারিকে ডাকলেন। এবার সে সেই “জ্ঞানী” উত্তর দিতে পারল না। ধরা পড়ে গেল তার চালাকির ফাঁদে।
📚 গল্পের শিক্ষা
এই ইসলামিক ও নৈতিক গল্পটি আমাদের শেখায়:
✅ সততা আর বিনয়ই প্রকৃত জ্ঞানীর পরিচয়।
✅ চালাকি দিয়ে হয়তো সাময়িক লাভ হয়, কিন্তু সেটা টেকে না।
✅ বিচার একদিন হবেই—বুদ্ধির মুখোশ পরে সত্যকে চিরকাল ঢেকে রাখা যায় না।